Tuesday, August 7, 2012

৮ আগস্ট বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন

মঙ্গলবার ৭ আগষ্ট ২০১২, ২৩ শ্রাবণ ১৪১৯

বিভিন্ন কর্মসূচীতে দিবসটি পালন করা হবে
আগামী ৮ আগস্ট বুধবার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন। ১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে জাতির জনকের হত্যাকারীদের নিষ্ঠুর, বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। শহীদ বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মাত্র তিন বছর বয়সে পিতা ও পাঁচ বছর বয়সে মাতাকে হারান। তাঁর ডাক নাম ছিল রেনু। পিতার নাম শেখ জহুরুল হক ও মাতার নাম হোসনে আরা বেগম। দাদা শেখ কাসেম চাচাত ভাই শেখ লুৎফর রহমানের পুত্র শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বেগম ফজিলাতুন্নেছার বিবাহ দেন। তখন থেকে বেগম ফজিলাতুন্নেছাকে শাশুড়ি বঙ্গবন্ধুর মাতা সাহেরা খাতুন নিজের সন্তানদের সঙ্গে মাতৃস্নেহে লালন-পালন করেন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে তিনি প্রাথমিক লেখাপড়া করেন। অতঃপর সামাজিক রীতি-নীতির কারণে গ্রামে গৃহশিক্ষকের কাছে লেখাপড়া করেন। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তাঁর প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল ও পাঠ্য বইয়ের বাইরে প্রচুর পড়াশোনা করতেন। টুঙ্গীপাড়া গ্রামে শেখ বাড়িতে পরিবারের ছেলেমেয়েদের ধর্মীয় শিক্ষাদানের জন্য মৌলভী এবং বাংলা, ইংরেজি ও অংক শিক্ষার জন্য গৃহশিক্ষক রাখার রেওয়াজ ছিল। পরিবারের সকল শিশু-কিশোর বিশেষ করে মেয়েরা বাড়িতেই শিক্ষা গ্রহণ করতো।

Sunday, August 5, 2012

বিরোধীদল ইতিবাচক সাড়া দিলে আমরা সংলাপে রাজি : আওয়ামী লীগ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক

৫ অগাস্ট ২০১২, ২১ শ্রাবণ ১৪১৯
আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা ঠিক করতে বিএনপি আলোচনার ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করলে আওয়ামী লীগ সংলাপে বসতে প্রস্তুত রয়েছে। এ বিষয়ে তারা সংসদে যৌক্তিক দাবি নিয়ে এলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে তা মেনে নেয়া হবে। অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রস্তাব দিয়েছেন সে ব্যাপারে বিএনপি ইতিবাচক সাড়া দেবে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সরকারের এ প্রস্তাব িসম্পর্কে তাদের পরিষ্কার ধারণা নেই বলেই তারা বিরোধিতা করছেন। আমরা রাজনীতিবিদরা অনেক সময় অনেক সিদ্ধান্ত নেই। আবার সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবতা বুঝে পরিবর্তন করি। তারা হয়তো বাস্তবতা বুঝতে পারবে। নিজেরা আলোচনা করে ভুল বুঝতে পেরে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে সাড়া দেবেন।
গতকাল শনিবার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাব না এমন সিদ্ধান্তে যদি বিএনপি অটল থাকে তাহলে আলোচনার ব্যাপারে আমাদের দিক থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়ার সুযোগ কম থাকে। বিএনপি আগে প্রস্তাব দিলে আমরা দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য যেকোন যৌক্তিক প্রস্তাব মেনে নিতে পারি।
হানিফ বলেন, বিগত তিনটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনোটি প্রশ্নাতীত ছিলো না। যে দল যখন পরাজিত হয়েছে সেই দলই প্রশ্ন তুলেছে। তাছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার চুক্তি ছিল তিন টার্মের জন্য। সে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার হাওয়া ভবনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে। আর সে টাকা দিয়ে লন্ডনে বসে তারেক রহমান কোটি কোটি টাকা খরচ করে আরাম-আয়েশে দিন কাটাছেন এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত করছেন। তিনি তো ব্যবসা করেননি। তার কোনো টিন নম্বরও ছিল না। তিনি কোনো ট্যাক্সও দেননি। হানিফ বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রীর দুই ছেলের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগ খুবই লজ্জাকর। তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতির মামলার বিচার ও শাস্তি এই সরকারের আমলেই হবে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকার। যদিও এ বিচার খুবই জটিল কাজ। ৪০ বছর আগের ঘটনা সাক্ষীসহ নানা জটিলতা রয়েছে। তারপর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ এগিয়ে চলছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আটককৃতদের বিচার সম্পন্ন করা হবে। আর এই সরকারের মেয়াদকালের মধ্যেই চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, নোবেল বিজয়ীরা আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যে যত বড় সন্মানী ব্যক্তিই হোক আইন সবার কাছে সমান। সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীকে কী আইনের আওতায় আনা হয়নি! আমেরিকায় দুজন নোবেল বিজয়ীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছিল। তিনি বলেন, সরকার গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস করছে না বরং ৮৬ লাখ গ্রাহকের ২৯ হাজার কোটি টাকা নিয়ে কোন অনিয়ম হয়েছে কি না তা জনগণকে জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
মাহবুব-উল-আলম বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অনেক মানুষ আত্মহত্যা করেছে, কেউ রিকশা চালাচ্ছে, কেউবা বুয়ার কাজ করছে। তাহলে তিনি দেশের কাজ করলেন কিভাবে? অপর এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, ৩ কোটি টাকা নিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়েছিলো। এরমধ্যে সরকারের ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ। এখন গ্রামীণ ব্যাংকের অর্থের পরিমাণ ২৯ হাজার কোটি টাকা। গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রাহক সংখ্যা ৮৬ লাখ। এই ৮৬ লাখ মানুষ কি এই টাকার মালিক? মিডিয়াতে সাক্ষাত্কারে ড. ইউনুস নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি বিদেশে টাকা পাঠিয়েছেন, কোনো ট্যাক্স দেননি। হানিফ বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা দিয়ে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এগুলো কার নামে চলছে? ট্যাক্স দিচ্ছে কিনা। সরকার তো কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। সরকার তদন্ত করছে। তিনি বলেন, আমরা যেমন গর্বিত জাতি একইভাবে ড. ইউনুস বিশ্বের বুকে আমাদের ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে পরিচিত করিয়েছেন। র্যাব নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত জোট সরকার র্যাবকে দলীয় কাজে ব্যবহার করেছে। আর এখন র্যাব সন্ত্রাস দমনে কাজ করছে।
সাংবাদিক নির্যাতন প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, সরকারের আমলে কয়েকটি বিছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এসবের দোষ সরকারের ওপর চাপানোর চেষ্টা চলছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে বর্তমান সরকার কোনোভাবেই জড়িত না। এসব ঘটনার তদন্ত চলছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সাংবাদিকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্বে অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের অভাবেই গণজাগরণ হচ্ছে, ফলে বিশ্ব শান্তি ব্যাহত হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

৫ অগাস্ট ২০১২, ২১ শ্রাবণ ১৪১৯
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি এবং সামাজিক নিরাপত্তার অভাব থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ সরকারবিরোধী গণবিক্ষোভের পথ বেছে নিচ্ছে। রোববার 'জনগণের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন' শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি এবং সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবের কারণে সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং টেকসই শান্তি ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সৃষ্টি হচ্ছে গণজাগরণের।" 'টেকসই' শান্তির জন্য ন্যায়বিচারকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, "এটা তখনই অর্জন করা সম্ভব, যখন ক্ষমতায়নের মাধ্যমে জনগণকে অর্থপূর্ণ উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত করা যাবে।" উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য দারিদ্র্য ও ক্ষুধা বিমোচন, বৈষম্য দূরীকরণ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে বঞ্চনার অবসান, সবার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, টেকসই ও সমতাভিত্তিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, মানবসম্পদ উন্নয়ন জোরদার করা এবং উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, "আমি বিশ্বাস করি, এসব বিষয় পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত এবং প্রণোদনামূলক।" জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৬তম সাধারণ অধিবেশনে 'জনগণের ক্ষমতায়ন' নিয়ে একটি মডেল উপস্থাপনের বিষয়টিও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, "আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ যারা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বঞ্চনা এবং প্রান্তিকীকরণের শিকার, তাদের জন্য এই মডেল উৎসর্গ করা যেতে পারে।"

Friday, August 3, 2012

আগামীকাল শেখ কামালের ৬৩তম জন্মবার্ষিকী


আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন কর্মসূচী
শনিবার, ৪ আগষ্ট ২০১২, ২০ শ্রাবণ ১৪১৯
sheikh_kamalআগামী ৫ আগস্ট সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ কামালের ৬৩তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের এই দিনে তিনি তদানীন্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাত্রিতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে জাতির জনকের হত্যাকারী মানবতার ঘৃণ্য শত্রুদের নির্মম-নিষ্ঠুর বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে শাহাদাত বরণ করেন। বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি.এ. অনার্স পাস করেন।
বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনের শিক্ষার অন্যতম উৎসমুখ ছায়ানট-এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সমাজ চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণে মঞ্চ নাটক আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথমসারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী। শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধূলায় প্রচণ্ড উৎসাহ ছিল তাঁর। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
শহীদ শেখ কামাল আমাদের দেশে নান্দনিক ফুটবল ও ক্রিকেটসহ অন্যান্য দেশীয় খেলার মান উন্নয়নে তাঁর অক্লান্ত শ্রম দিয়ে অপরিসীম অবদান রেখেছিলেন। নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলতেন এবং তাদের সাথে নিয়মিত অনুশীলন করতেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লু দেশবরেণ্য অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সাথে তাঁর বিয়ে হয়। বাংলাদেশ ছাত্র লীগের একজন নিবেদিত, সংগ্রামী, আদর্শবাদী কর্মী হিসেবে ৬৯-র গণঅভ্যুত্থান ও ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে যথোচিত ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ রাতে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ৩২ নম্বর সড়কস্থ বাসভবন আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশনন্ড লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন এবং শাহাদাত বরণের সময় বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাত বরণের সময় তিনি সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের এম. এ শেষ পর্বের পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

Wednesday, August 1, 2012

বাঙালির শোকের মাস -আগস্ট

১৫ আগস্ট- জাতীয় শোক দিবসসহ শোকাবহ আগস্ট পালনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর মাসব্যাপী নানা কর্মসূচী।   ১লা জুলাই,২০১২

flagবাঙালি জাতির ইতিহাসে শোকের মাস- আগস্ট। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত বেদনাবিধূর শোকের দিন বর্ষ পরিক্রমায় আবার বাঙালি জাতির দ্বারে সমাগত। ১৯৭৫ সালের এই দিনে মানবতার দুশমন প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকদের হাতে আবহমান বাংলা ও বাঙালির আরাধ্য পুরুষ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপিতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হন। ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম এই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন সেদিন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী নীরবে-নিভৃতে যিনি প্রেরণা যুগিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতা ও বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য মহিয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভ্রাতা শেখ আবু নাসের, জাতির জনকের জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ ফুটবলের আধুনিকতার স্রষ্টা, আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা ও সাংস্কৃতিক জগতের অন্যতম পুরোধা শেখ কামাল, বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় পুত্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গর্বিত বীর সেনানী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল, বঙ্গবন্ধুর আদরের কনিষ্ঠ পুত্র নিষ্পাপ শিশু শেখ রাসেল, জাতির জনকের নবপরিণীতা পুত্রবধূ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ব্লু' উপাধিপ্রাপ্ত দেশসেরা অ্যাথলেট সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক কৃষক নেতা জাতির জনকের ভগ্নিপতি তাঁর মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত আব্দুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আব্দুল নঈম খান রিন্টু, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন রক্ষায় এগিয়ে আসা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গর্ব বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ ও কর্তব্যরত অনেক পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারী। এই ঘৃণ্য নরপশু, কাপুরুষ হায়েনাদের বর্বরতা থেকে শিশু-নারী কেহই রেহাই পায়নি। ক্ষণজন্মা যে পুরুষ জাতির হাতে তুলে দিয়েছিলেন স্বাধীনতার উজ্জ্বল পতাকা; কিন্তু ঘাতকের বুলেটে তিনি পেয়েছেন নির্মম প্রতিদান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে জাতীয় ও আন-র্জাতিক চক্রান্ত কারীদের পদলেহী ঘাতকগোষ্ঠী বাঙালির হাজার বছরের প্রত্যাশার অর্জন স্বাধীনতাকে, তথা বাঙালির সকল মহতী আকাঙ্ক্ষাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। মুছে ফেলতে অপপ্রয়াস চালিয়েছে বাঙালির বীরত্বগাঁথা ইতিহাস। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে পাকিস্তানি সামপ্রদায়িক ধারা পরাভূত হয়েছিল তাই আবার যেন পুনর্জন্ম লাভ করেছিল। মূলতঃ তাদের উদ্যত সঙ্গীন আমাদের সুমহান স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বাঙালির হাজার বছরের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সভ্যতা, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ ও অর্থনৈতিক মুক্তির সোনালী শুভ গণমুখী পদক্ষেপগুলোকে স্তব্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধকে নস্যাৎ করার প্রয়াসে এবং সমাজ প্রগতির অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার জন্যই এই আঘাত হেনেছিল।