|
মঙ্গলবার ৭ আগষ্ট ২০১২, ২৩ শ্রাবণ ১৪১৯
বিভিন্ন কর্মসূচীতে দিবসটি পালন করা হবেআগামী
৮ আগস্ট বুধবার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিন।
১৯৩০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ
করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে জাতির জনকের হত্যাকারীদের
নিষ্ঠুর, বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। শহীদ
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মাত্র তিন বছর বয়সে পিতা ও পাঁচ বছর
বয়সে মাতাকে হারান। তাঁর ডাক নাম ছিল রেনু। পিতার নাম শেখ জহুরুল হক ও
মাতার নাম হোসনে আরা বেগম। দাদা শেখ কাসেম চাচাত ভাই শেখ লুৎফর রহমানের
পুত্র শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বেগম ফজিলাতুন্নেছার বিবাহ দেন। তখন থেকে
বেগম ফজিলাতুন্নেছাকে শাশুড়ি বঙ্গবন্ধুর মাতা সাহেরা খাতুন নিজের সন্তানদের
সঙ্গে মাতৃস্নেহে লালন-পালন করেন।
গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে তিনি প্রাথমিক লেখাপড়া করেন। অতঃপর সামাজিক
রীতি-নীতির কারণে গ্রামে গৃহশিক্ষকের কাছে লেখাপড়া করেন। ছোটবেলা থেকেই
পড়াশোনার প্রতি তাঁর প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল ও পাঠ্য বইয়ের বাইরে প্রচুর পড়াশোনা
করতেন। টুঙ্গীপাড়া গ্রামে শেখ বাড়িতে পরিবারের ছেলেমেয়েদের ধর্মীয়
শিক্ষাদানের জন্য মৌলভী এবং বাংলা, ইংরেজি ও অংক শিক্ষার জন্য গৃহশিক্ষক
রাখার রেওয়াজ ছিল। পরিবারের সকল শিশু-কিশোর বিশেষ করে মেয়েরা বাড়িতেই
শিক্ষা গ্রহণ করতো।
৫ অগাস্ট ২০১২, ২১ শ্রাবণ ১৪১৯
আওয়ামী
লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন,
অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা ঠিক করতে বিএনপি আলোচনার ইতিবাচক মনোভাব
প্রকাশ করলে আওয়ামী লীগ সংলাপে বসতে প্রস্তুত রয়েছে। এ বিষয়ে তারা সংসদে
যৌক্তিক দাবি নিয়ে এলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে তা মেনে নেয়া হবে। অন্তর্বর্তী
মন্ত্রিসভা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রস্তাব দিয়েছেন সে
ব্যাপারে বিএনপি ইতিবাচক সাড়া দেবে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সরকারের এ
প্রস্তাব িসম্পর্কে তাদের পরিষ্কার ধারণা নেই বলেই তারা বিরোধিতা করছেন।
আমরা রাজনীতিবিদরা অনেক সময় অনেক সিদ্ধান্ত নেই। আবার সেই সিদ্ধান্ত
বাস্তবতা বুঝে পরিবর্তন করি। তারা হয়তো বাস্তবতা বুঝতে পারবে। নিজেরা
আলোচনা করে ভুল বুঝতে পেরে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে সাড়া দেবেন।
গতকাল
শনিবার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে মাহবুব-উল-আলম
হানিফ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাব না এমন সিদ্ধান্তে যদি
বিএনপি অটল থাকে তাহলে আলোচনার ব্যাপারে আমাদের দিক থেকে আনুষ্ঠানিক
প্রস্তাব দেয়ার সুযোগ কম থাকে। বিএনপি আগে প্রস্তাব দিলে আমরা দেশের
মানুষের মঙ্গলের জন্য যেকোন যৌক্তিক প্রস্তাব মেনে নিতে পারি।
হানিফ
বলেন, বিগত তিনটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনোটি প্রশ্নাতীত ছিলো না। যে দল
যখন পরাজিত হয়েছে সেই দলই প্রশ্ন তুলেছে। তাছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার
চুক্তি ছিল তিন টার্মের জন্য। সে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তিনি বলেন,
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার হাওয়া ভবনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লুটপাট
করেছে। আর সে টাকা দিয়ে লন্ডনে বসে তারেক রহমান কোটি কোটি টাকা খরচ করে
আরাম-আয়েশে দিন কাটাছেন এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত করছেন। তিনি তো
ব্যবসা করেননি। তার কোনো টিন নম্বরও ছিল না। তিনি কোনো ট্যাক্সও দেননি।
হানিফ বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রীর দুই ছেলের বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির অভিযোগ
খুবই লজ্জাকর। তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতির মামলার বিচার ও
শাস্তি এই সরকারের আমলেই হবে।
যুদ্ধাপরাধীদের
বিচার প্রসঙ্গে মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আওয়ামী
লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকার। যদিও এ বিচার খুবই জটিল কাজ। ৪০ বছর আগের ঘটনা
সাক্ষীসহ নানা জটিলতা রয়েছে। তারপর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ এগিয়ে চলছে।
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আটককৃতদের বিচার সম্পন্ন করা হবে। আর এই সরকারের
মেয়াদকালের মধ্যেই চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হবে।
তিনি
বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, নোবেল বিজয়ীরা আইনের ঊর্ধ্বে
নয়। যে যত বড় সন্মানী ব্যক্তিই হোক আইন সবার কাছে সমান। সাবেক দুই
প্রধানমন্ত্রীকে কী আইনের আওতায় আনা হয়নি! আমেরিকায় দুজন নোবেল বিজয়ীকে
আইনের আওতায় আনা হয়েছিল। তিনি বলেন, সরকার গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস করছে না
বরং ৮৬ লাখ গ্রাহকের ২৯ হাজার কোটি টাকা নিয়ে কোন অনিয়ম হয়েছে কি না তা
জনগণকে জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
মাহবুব-উল-আলম
বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অনেক মানুষ আত্মহত্যা করেছে, কেউ রিকশা
চালাচ্ছে, কেউবা বুয়ার কাজ করছে। তাহলে তিনি দেশের কাজ করলেন কিভাবে? অপর
এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, ৩ কোটি টাকা নিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের
কার্যক্রম শুরু হয়েছিলো। এরমধ্যে সরকারের ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ। এখন গ্রামীণ
ব্যাংকের অর্থের পরিমাণ ২৯ হাজার কোটি টাকা। গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রাহক
সংখ্যা ৮৬ লাখ। এই ৮৬ লাখ মানুষ কি এই টাকার মালিক? মিডিয়াতে সাক্ষাত্কারে
ড. ইউনুস নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি বিদেশে টাকা পাঠিয়েছেন, কোনো ট্যাক্স
দেননি। হানিফ বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা দিয়ে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান করেছেন ড.
মুহাম্মদ ইউনূস। এগুলো কার নামে চলছে? ট্যাক্স দিচ্ছে কিনা। সরকার তো কারো
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। সরকার তদন্ত করছে। তিনি বলেন, আমরা যেমন গর্বিত
জাতি একইভাবে ড. ইউনুস বিশ্বের বুকে আমাদের ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে পরিচিত
করিয়েছেন। র্যাব নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত জোট
সরকার র্যাবকে দলীয় কাজে ব্যবহার করেছে। আর এখন র্যাব সন্ত্রাস দমনে কাজ
করছে।
সাংবাদিক
নির্যাতন প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, সরকারের আমলে কয়েকটি বিছিন্ন ঘটনা ঘটেছে।
এসবের দোষ সরকারের ওপর চাপানোর চেষ্টা চলছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে বর্তমান
সরকার কোনোভাবেই জড়িত না। এসব ঘটনার তদন্ত চলছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সাংবাদিকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
৫ অগাস্ট ২০১২, ২১ শ্রাবণ ১৪১৯
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি এবং সামাজিক
নিরাপত্তার অভাব থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ সরকারবিরোধী
গণবিক্ষোভের পথ বেছে নিচ্ছে। রোববার 'জনগণের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন' শীর্ষক এক
আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "অংশগ্রহণমূলক
গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি এবং সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবের কারণে
সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং টেকসই শান্তি ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন
প্রান্তে সৃষ্টি হচ্ছে গণজাগরণের।" 'টেকসই' শান্তির জন্য ন্যায়বিচারকে
একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, "এটা তখনই
অর্জন করা সম্ভব, যখন ক্ষমতায়নের মাধ্যমে জনগণকে অর্থপূর্ণ উন্নয়নের সাথে
সম্পৃক্ত করা যাবে।"
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য
দারিদ্র্য ও ক্ষুধা বিমোচন, বৈষম্য দূরীকরণ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির
মাধ্যমে বঞ্চনার অবসান, সবার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, টেকসই ও সমতাভিত্তিক
প্রবৃদ্ধি অর্জন, মানবসম্পদ উন্নয়ন জোরদার করা এবং উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ
মোকাবিলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, "আমি বিশ্বাস করি, এসব বিষয়
পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত এবং প্রণোদনামূলক।" জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৬তম
সাধারণ অধিবেশনে 'জনগণের ক্ষমতায়ন' নিয়ে একটি মডেল উপস্থাপনের বিষয়টিও
উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, "আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিশ্বের
লাখ লাখ মানুষ যারা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বঞ্চনা এবং
প্রান্তিকীকরণের শিকার, তাদের জন্য এই মডেল উৎসর্গ করা যেতে পারে।"
আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন কর্মসূচীশনিবার, ৪ আগষ্ট ২০১২, ২০ শ্রাবণ ১৪১৯আগামী
৫ আগস্ট সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ কামালের ৬৩তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের এই
দিনে তিনি তদানীন্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন
এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাত্রিতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে জাতির জনকের
হত্যাকারী মানবতার ঘৃণ্য শত্রুদের নির্মম-নিষ্ঠুর বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের
শিকার হয়ে শাহাদাত বরণ করেন। বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী
তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা
কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান
বিভাগ থেকে বি.এ. অনার্স পাস করেন।
বাংলাদেশের
শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনের শিক্ষার অন্যতম উৎসমুখ ছায়ানট-এর সেতার
বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশের
পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য
উন্নয়নে সমাজ চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণে মঞ্চ নাটক আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি
প্রথমসারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন স্পন্দন
শিল্পী গোষ্ঠী। শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
অভিনেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। শৈশব
থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধূলায় প্রচণ্ড উৎসাহ
ছিল তাঁর। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক
ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
শহীদ
শেখ কামাল আমাদের দেশে নান্দনিক ফুটবল ও ক্রিকেটসহ অন্যান্য দেশীয় খেলার
মান উন্নয়নে তাঁর অক্লান্ত শ্রম দিয়ে অপরিসীম অবদান রেখেছিলেন। নতুন নতুন
খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলতেন এবং তাদের সাথে নিয়মিত
অনুশীলন করতেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্লু দেশবরেণ্য
অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সাথে তাঁর বিয়ে হয়। বাংলাদেশ ছাত্র লীগের একজন
নিবেদিত, সংগ্রামী, আদর্শবাদী কর্মী হিসেবে ৬৯-র গণঅভ্যুত্থান ও ৭১-এর
মুক্তিযুদ্ধে যথোচিত ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ রাতে পাকহানাদার
বাহিনী কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ৩২ নম্বর সড়কস্থ বাসভবন
আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে
অংশগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশনন্ড লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের
প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ
করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন
এবং শাহাদাত বরণের সময় বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন
জাতীয় ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট
শাহাদাত বরণের সময় তিনি সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের এম. এ শেষ পর্বের পরীক্ষা
দিয়েছিলেন।
১৫ আগস্ট- জাতীয় শোক দিবসসহ শোকাবহ আগস্ট পালনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর মাসব্যাপী নানা কর্মসূচী। ১লা জুলাই,২০১২
বাঙালি
জাতির ইতিহাসে শোকের মাস- আগস্ট। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। মানব সভ্যতার
ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত বেদনাবিধূর শোকের দিন
বর্ষ পরিক্রমায় আবার বাঙালি জাতির দ্বারে সমাগত। ১৯৭৫ সালের এই দিনে
মানবতার দুশমন প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকদের হাতে আবহমান বাংলা ও বাঙালির আরাধ্য
পুরুষ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপিতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হন। ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম এই হত্যাকাণ্ডের
শিকার হয়েছিলেন সেদিন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী নীরবে-নিভৃতে যিনি প্রেরণা
যুগিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতা ও বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য মহিয়সী
নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভ্রাতা শেখ আবু নাসের,
জাতির জনকের জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ ফুটবলের আধুনিকতার
স্রষ্টা, আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা ও সাংস্কৃতিক জগতের অন্যতম পুরোধা শেখ কামাল,
বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় পুত্র বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গর্বিত বীর সেনানী, বীর
মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল, বঙ্গবন্ধুর আদরের কনিষ্ঠ পুত্র নিষ্পাপ শিশু শেখ
রাসেল, জাতির জনকের নবপরিণীতা পুত্রবধূ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ব্লু'
উপাধিপ্রাপ্ত দেশসেরা অ্যাথলেট সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, মুক্তিযুদ্ধের
অন্যতম সংগঠক ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা আওয়ামী যুবলীগের
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম
আরজু মণি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক কৃষক নেতা জাতির জনকের
ভগ্নিপতি তাঁর মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট
মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত
আব্দুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আব্দুল নঈম খান রিন্টু,
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন রক্ষায় এগিয়ে আসা বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর গর্ব বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল জামিল উদ্দিন
আহমেদ ও কর্তব্যরত অনেক পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারী। এই ঘৃণ্য নরপশু, কাপুরুষ
হায়েনাদের বর্বরতা থেকে শিশু-নারী কেহই রেহাই পায়নি।
ক্ষণজন্মা যে পুরুষ জাতির হাতে তুলে দিয়েছিলেন স্বাধীনতার উজ্জ্বল পতাকা;
কিন্তু ঘাতকের বুলেটে তিনি পেয়েছেন নির্মম প্রতিদান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে জাতীয় ও আন-র্জাতিক চক্রান্ত কারীদের পদলেহী
ঘাতকগোষ্ঠী বাঙালির হাজার বছরের প্রত্যাশার অর্জন স্বাধীনতাকে, তথা
বাঙালির সকল মহতী আকাঙ্ক্ষাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। মুছে ফেলতে অপপ্রয়াস
চালিয়েছে বাঙালির বীরত্বগাঁথা ইতিহাস। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে পাকিস্তানি
সামপ্রদায়িক ধারা পরাভূত হয়েছিল তাই আবার যেন পুনর্জন্ম লাভ করেছিল। মূলতঃ
তাদের উদ্যত সঙ্গীন আমাদের সুমহান স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত
বাঙালির হাজার বছরের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সভ্যতা, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ ও
অর্থনৈতিক মুক্তির সোনালী শুভ গণমুখী পদক্ষেপগুলোকে স্তব্ধ করার হীন
উদ্দেশ্যে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধকে নস্যাৎ করার প্রয়াসে এবং সমাজ
প্রগতির অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার জন্যই এই আঘাত হেনেছিল।
সোমবার | ৩০ জুলাই ২০১২ | ১৫ শ্রাবণ ১৪১৯
অলিম্পিক
গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে লন্ডনে পাঁচ দিনের সফর শেষে দেশে
ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।সোমবার সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে বিমান
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত
জানান মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবর্গসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। রোববার
বাংলাদেশ সময় রাত ১১.১০ (লন্ডন সময় বিকেল ৬.১০ মিনিট) মিনিটে বিমান
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন তিনি।
গত ২৫ জুলাই বুধবার অলিম্পিক কমিটির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী লন্ডন যান।
ঐদিনই লন্ডনের বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন
তিনি। ২৬ জুলাই বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ
এবং হাউস অব লর্ডসের সদস্য লর্ড আহমেদকে সাক্ষাৎ দেন প্রধানমন্ত্রী। ঐদিনই
সানডে টেলিগ্রাফের হোয়াইট হল এডিটর টেড জিউরি একটি সাক্ষাতকার নেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ২৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাতকার দেন আল
জাজিরা টেলিভিশনকে। ঐদিন দুপুরে ব্রিটেনের বিরোধী দলীয় নেতা এডওয়ার্ড
মিলিব্যান্ড প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন হোটেলে স্যুটে।
বিকেলে বাকিংহাম প্যালেসে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের দেওয়া এক রিসিপশনে ছেলে
জয়কে নিয়ে যোগদেন প্রধানমন্ত্রী। ঐ রিসিপশন শেষে তিনি সরাসরি চলে যান
অলিম্পিক ভিলেজে অলিম্পিক ২০১২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।এছাড়া সর্ব ইউরোপীয়
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল, সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রতিনিধিদল,
ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স এবং বাংলাদেশ ক্যাটারারস
অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দও আলাদাভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে। এই সফরে বিবিসি, আলজাজিরাসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকেও সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রবাসীদের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
রোববার | ২৯ জুলাই ২০১২ | ১৪ শ্রাবণ ১৪১৯
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য টোল বা চাঁদা আদায়ের পরিবর্তে বেশি
করে রেমিট্যান্স দেশে পাঠানোর জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি আহ্বান
জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী গতকাল (শনিবার) সন্ধ্যায় এখানে তাঁর সম্মানে
পার্ক প্লাজা ওয়েস্টমিনিস্টার হোটেলে বাংলাদেশ কমিউনিটি আয়োজিত ইফতার
মাহফিলে এ আহ্বান জানান। প্রবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'পদ্মা সেতু
নির্মাণের জন্য টোল আদায় বা চাঁদা তোলার দরকার নেই। বরং আপনারা দেশে আরো
বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠান।' শেখ হাসিনা বলেন, নিজস্ব তহবিলে বহু
প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণে তাঁর সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতি
দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের মানুষের সাড়া দেখে তিনি অভিভূত হয়েছেন।
সরকার
চলতি অর্থবছরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করতে বাজেটে আর্থিক বিধানও
রেখেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের সকল
গণতান্ত্রিক আন্দোলনে লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবদানের কথা স্মরণ করে
বলেন, তারা ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর জন্য চাঁদা তুলে
আইনজীবী নিয়োগ করেছিলেন এবং লন্ডন থেকেই প্রথম বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচারের
দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল।
ব্রিটেনের বিরোধীদলীয় নেতা মিলিব্যান্ডকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
শনিবার | ২৮ জুলাই ২০১২ | ১৩ শ্রাবণ ১৪১৯
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সরকারি
প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ। সে জন্য আগামী নির্বাচন
অনুষ্ঠিত হবে সম্পূর্ণ সরকারি প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষভাবে। গতকাল স্থানীয়
সময় দুপুরে লন্ডনের হোটেল সেন্ট প্যানক্রসের কক্ষে ব্রিটেনের বিরোধীদলীয়
নেতা এডওয়ার্ড স্যামুয়েল মিলিব্যান্ড তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে প্রধানমন্ত্রী
এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ এ
বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান। ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা
এডওয়ার্ড মিলিব্যান্ডকে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার নির্বাচন প্রক্রিয়াকে
২০০৮ সালের নির্বাচনের মতো সরকারি প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ রাখতে বিরামহীন
চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে ৫ হাজার ২০০টি
বিভিন্ন ধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের এসব
নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। এসব নির্বাচনে কোনো সরকারি
প্রভাব ছিল না। একইভাবে ভবিষ্যতের সব নির্বাচনও সম্পূর্ণ অবাধ ও নিরপেক্ষ
হবে। বৈঠকে মিলিব্যান্ডের সঙ্গে ছিলেন লেবার পার্টির আরেক নেতা ডগলাস
আলেকজান্ডার এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশনারা আলি।
পছন্দের কোম্পানিকে কাজ না দেয়ায় ঋণ বাতিল করে বিশ্বব্যাংক, সাংবাদিকদের সাথে ইফতারে শেখ হাসিনা
বৃহস্পতিবার | ২৬ জুলাই ২০১২ | ১১ শ্রাবণ ১৪১৯
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেছেন, পছন্দের বিদেশি কোম্পানির পক্ষে বিশ্বব্যাংকের অব্যাহত
চাপ অগ্রাহ্য করার কারণেই পদ্মাসেতু ঋণচুক্তি বাতিল হয়েছে। তিনি প্রশ্ন
রেখে বলেন, একটি বিদেশি কোম্পানিকে পরামর্শকের কাজ পাইয়ে দিতে বাংলাদেশের
উপর বিশ্বব্যাংকের ওই চাপের বিনিময় পার্সেন্টেজ কত ছিল এটি যদি আমরা জানতে
চাই তা কি খুব অন্যায় হবে? বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় (লন্ডন সময় রাত
৯টা) কেন্দ্রীয় লন্ডনের সেন্ট প্যাংক্রাস রেনেসাঁ হোটেলে লন্ডনের বাংলা
মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে ইফতার পরবর্তী প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী এ
মন্তব্য করেন।
ইফতার মাহফিলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ
আশরাফুল ইসলাম ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিও উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের
ঋণচুক্তি বাতিল-পরবর্তী নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু তৈরির ঘোষণার পর
''সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের পদত্যাগ কি সরকারের পিছুটান?'এ
প্রশ্ন করা হলে জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ''অবশ্যই না। আমরা
বলেছি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু আমরা করবো।'' ''এরই মধ্যে এর প্রাথমিক
প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে'' উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, '' আমাদের এই
প্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়ে কোনো সংস্থা যদি পদ্মাসেতুর জন্যে ঋণ দিতে চায়,
সেটি আমরা অবশ্যই গ্রহণ করবো। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের পদত্যাগকে
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু তৈরীর ঘোষণা থেকে পিছুটান হিসেবে দেখার কোন
সুযোগ নেই। '' প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ''বিশ্বব্যাংক আমাদের এমনি
এমনি ঋণ দেয় না। এই ঋণের বিনিময়ে আমাদের কাড়ি কাড়ি সুদ দিতে হয়।''
২০ জুলাই ২০১২, ৫ শ্রাবণ ১৪১৯
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বের সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও আগামী জাতীয় নির্বাচন সেভাবেই হবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই ক্ষমতায় যাবে। বর্তমান সরকারের আমলে উপ, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ইউপিসহ প্রায় ৫ হাজার ২২৬টি নির্বাচন সম্পন্ন করেছে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। সবগুলো অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। একটি নির্বাচন নিয়েও কোন প্রশ্ন ওঠেনি। পদ্মা সেতু নির্মাণের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নতি করে ২০২১ সালের মধ্যে আমরা দেশকে উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবো। গতকাল বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে কৃষক লীগের ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে লুটপাটে ব্যস্ত থাকে। জণগণের কল্যাণ নয়, তারা প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। দুর্নীতিতে বারবার চ্যাম্পিয়ন বিএনপি শুধু ভাঙতে জানে, গড়তে নয়। দেশে কোনো উন্নয়ন তারা করতে পারেনি। দুর্নীতি, লুটপাট সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করাই ছিল তাদের কাজ। বিএনপি সরকার আমলে সার চাইতে গিয়ে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে পাখির মতো হত্যা করা হয়। বিদ্যুত্ চাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষকে তারা হত্যা করেছে। পবিত্র রমজান মাসে তারা শ্রমিকদের হত্যা করে।
বুধবার, ১৮ জুলাই ২০১২, ৩ শ্রাবণ ১৪১৯ শ্রমিক লীগের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজেদের অর্থেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বাবাসীকে দেখিয়ে দেবো যে, আমরাও পারি। আমরা কারো কাছে ভিক্ষা-খয়রাত চাই না, হাত পাততে চাই না, হতে চাই স্বনির্ভর। আমরা গর্বিত জাতি, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। আত্মসন্মানবোধ আমাদের সম্পদ। এ জাতির ওপর অহেতুক কালিমা লেপন বরদাশত করা হবে না। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের পক্ষে মানুষের মধ্যে যে ব্যাপক চেতনা জাগ্রত হয়েছে, সেটাই আমাদের বড় শক্তি। অর্থের সংকুলান আমরা করতে পারবো ইনশাল্লাহ। তিনি বলেন, আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে আমরা হত দরিদ্রদের বিনামূল্যে খাবার খাওয়াবো। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর যে পরিমাণ খাদ্য উত্পাদন বাড়িয়েছে, তাতে এ মাসে দরিদ্রদের বিনামূল্যে খাওয়ালে কোনো সমস্যা হবে না।
মঙ্গলবার | ১৭ জুলাই ২০১২ | ২ শ্রাবণ ১৪১৯
টেলিফোনে যাতায়াত সমস্যার কথা শুনে তাৎক্ষণিক রাজধানীর ডেমরার নারীদের জন্য বাস সার্ভিস চালুর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ডেমরার কয়েকজন কর্মজীবী নারীর ফোনালাপের কথা জানান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিল। ওই নারীরা তাদের এলাকা ডেমরা থেকে ঢাকা পর্যন্ত কোনো মহিলা বাস সার্ভিস চালু নেই এবং ওই রুটে মহিলা বাস সার্ভিস চালু হলে উপকার হবে বলে মোবাইলে প্রধানমন্ত্রীকে জানান। এ কথা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে প্রধানমন্ত্রী বিআরটিসির চেয়ারম্যানকে ডেকে আনেন। চেয়ারম্যান গণভবনে উপস্থিত হলে মঙ্গলবার থেকেই ডেমরা-মতিঝিল রুটে নারীদের জন্য দুটি বাস চালুর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার | ১৪ জুলাই ২০১২ | ৩০ আষাঢ় ১৪১৯ দেশে অশান্তি সৃষ্টির যে কোনো অপতৎপরতা রুখে দিতে যুবলীগ নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার যুবলীগের ষষ্ঠ কংগ্রেসের উদ্বোধন করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যত নেতৃত্ব গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশ ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সচেতন থাকার জন্য যুবলীগসহ সবাইকে পরামর্শ দেন। অশান্তি সৃষ্টির কৌশল মোকাবেলায় সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই অশান্তির আগুনে সবকিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করতে বিভিন্ন কৌশল করছে। আপনারা জানেন, কারা এই অশান্তি সৃষ্টি করছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার ইস্যুতে বিরোধীদলের অবস্থানের কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, "তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়। গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এজন্য যুবসমাজকে সতর্ক থাকতে হবে।" তিনি বলেন, "অনেক কষ্টে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পেরেছি। বারবার গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এসেছে। ভবিষ্যতে আর কেউ যেন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করতে না পারে, নতুন করে খেলায় মাততে না পারে, সেজন্য প্রতিটি পাড়া মহল্লা ও গ্রামগঞ্জে
শনিবার | ১৩ জুলাই ২০১২
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনেকেই তাকে ফোন করে সাহস জোগাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী।শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনও পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ফোন পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের মধ্যে অনেক প্রবাসী এ প্রকল্পে অর্থায়নের আগ্রহ দেখিয়েছেন। সেতু নির্মাণের জন্য বন্ড ছেড়ে অর্থ সংগ্রহের পরামর্শও দিয়েছেন কেউ কেউ।প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিল বলেন, 'পদ্মা সেতু নির্মাণে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সারাদিনের ব্যস্ততার মাঝেও যখনই সময় পাচ্ছেন, তখনই ফোন ধরছেন।' প্রধানমন্ত্রী গত ৪ জুলাই সংসদে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তার দুটি মোবাইল ফোন নম্বর এবং ই-মেইল ঠিকানা নাগরিকদের উদ্দেশে প্রকাশ করেন। তার পরিবারের সদস্যদের নাম ভাঙিয়ে কেউ অবৈধ সুযোগ নিতে চাইলে তা সরাসরি তাকে জানানোর অনুরোধ করেন শেখ হাসিনা। এরপর স্কুলছাত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তাকে ফোন করে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলছেন বলে জানান শাকিল।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী জানান, জাহাঙ্গীরনগর ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ প্রকল্পে অর্থ সহায়তা দিতে চেয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের কিছু ছাত্র তাদের হাত খরচ টাকা বাঁচিয়ে উপাচার্যের কাছে ছয় হাজার টাকা দিয়েছেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের একদিনের বেতন এই সেতুর জন্য দেওয়ার কথা বলেছেন। গোপালগঞ্জের করপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা দুই লাখ টাকা দেবেন বলেছেন। এছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠন, বেসরকারি ব্যাংক এবং বীমা কোম্পানি ইতিমধ্যে পদ্মা সেতুতে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ১২ জুলাই ২০১২, ২৮ আষাঢ় ১৪১৯
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে আবারো বলেছেন, আমরা নিজেদের টাকায়ই পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবো। কেননা আমরা দুর্নীতি করে অর্থ সম্পদ বানাতে আসেনি। কোন দাতা সংস্থা কিংবা কোন দেশ ঋণ নিয়ে এগিয়ে আসলে সেটা যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে। আমরা ঋণ নেবো, সুদসহ ফেরতও দেব। কিন্তু কারো কাছে ভিক্ষা করবো না। আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে, আমরা কোন অন্যায় করিনি। জনগণও এটা বুঝতে সক্ষম হয়েছে বলেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিশ্বব্যাংককে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের অনেক শক্তি আছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। তাই এদেশের জনগণ অতীতে যেমন কারো কাছে মাথা নত করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। তিনি প্রশ্ন রেখে
বলেন, কার খাতিরে তারা (বিশ্বব্যাংক) বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করলো। যেখানে কোন অর্থই ছাড় দেয়া হয়নি, সেখানে দুর্নীতি হয় কীভাবে? যারা ভেবেছিল পদ্মা সেতুর দুর্নীতির কথা বলে সরকারকে জনবিচ্ছিন্ন করা যাবে, তাদের ধারণা যে কত বড় ভুল ছিল তা প্রমাণ হয়েছে। বরং অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে উল্টো দেশের মানুষ যেন সরকারের পক্ষে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতই আবার জেগে উঠেছে। একই সঙ্গে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেশবাসী জাগ্রত হয়েছে।
'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' আমাদের জাতীয় ইতিহাসের অমূল্য দলিল: আলোচনাসভায় বক্তারা
মঙ্গলবার | ১০ জুলাই ২০১২ | ২৬ আষাঢ় ১৪১৯
স্বাধিকার আন্দোলনের নেতা হিসেবে মাঠের বক্তৃতা, জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে দৃপ্ত কণ্ঠে বাঙালির স্বাধীনতার ঘোষণা, মুক্তি সংগ্রামের ডাক কিংবা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে জাতির উদ্দেশে ভাষণ_ এসবের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিচয় দেশের মানুষের কাছে, বিশ্বসভায়। কিন্তু রাজনৈতিক জীবনের বাইরেও বঙ্গবন্ধুর ছিল একটি ব্যক্তিগত জীবন। ব্যক্তিগত অনুভূতি, আবেগ_ সবকিছুর ভেতরে তিনি তাড়িত হতেন, রোমান্টিক চোখে সবুজ প্রকৃতি দেখতেন। স্বামী হিসেবে স্ত্রীর জন্য প্রেম, পিতা হিসেবে সন্তানের জন্য স্নেহ, জননেতা হিসেবে মানুষের জন্য একান্ত ভাবনায় কীভাবে আলোড়িত হতেন মহাপ্রাণ বঙ্গবন্ধু_ তা এতদিন সবার কাছেই অজানা ছিল। সেই অজানা অধ্যায় এবার জনসাধারণের কাছে মূর্ত হয়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' গ্রন্থে। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে জেলে
কারাবন্দি থাকা অবস্থায় তিনি নিয়মিত নিজের একান্ত আবেগ-অনুভূতির কথা লিখতেন। আর সেই লেখা খাতাগুলো সযত্নে সংরক্ষণ করতেন বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর সেসব লেখাই স্থান পেয়েছে 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' গ্রন্থে। বঙ্গবন্ধুর এই লেখার সাহিত্যমান সম্পর্কে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের অভিমত, বঙ্গবন্ধুর গদ্য অসাধারণ, তার এই লেখা বিশ্বসাহিত্যের শীর্ষস্থানীয় আত্মজীবনীগুলোর মতোই অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে। গতকাল সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এ গ্রন্থ সবার সামনে উন্মুক্ত করে ঘোষণা করলেন, 'জাতির অমূল্য সম্পদ জাতির হাতে তুলে দিলাম।'
বৃহস্পতিবার | ৫ জুলাই ২০১২ | ২১ আষাঢ় ১৪১৯
পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে প্রয়োজনে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা দরিদ্র হতে পারি। প্রয়োজনে রিজার্ভ থেকে বছরে এক-দুই বিলিয়ন ডলার খরচ করে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করা মোটেই কষ্টের কিছু নয়। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে অপবাদ দিয়েছে। বাংলাদেশের দুর্নীতির বিষয়ে তারা কথা বলেছে; কিন্তু তাদের দুর্নীতি কে দেখে? বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর সাপ্তাহিক প্রশ্নোত্তরে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার বিশ্বব্যাংক সরকারের সঙ্গে ঋণচুক্তি বাতিল করার পর এই প্রথম কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে আগামী ৮ জুলাই বাজেট অধিবেশনের শেষদিন তার বক্তৃতায় এসব বিষয়ে আরও বিস্তারিত বলবেন বলেও জানান তিনি।
পদ্মা সেতুর নতুন সম্ভাবনা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে মালয়েশিয়া পদ্মা সেতু নির্মাণের বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে। আরও দেশ থেকে প্রস্তাব চাওয়া হবে; কিন্তু যে দেশই প্রস্তাব দিক, তা আমাদের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বমন্দা সত্ত্বেও আমরা যদি নিজেদের অর্থনীতি ধরে রাখতে পারি, তাহলে পদ্মা সেতু করতে পারব না, এটা হয় না। প্রয়োজনে এক্ষেত্রে নিজেরাও বিনিয়োগ করব। গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট খাতের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন বলে সংসদকে জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকবার অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত এমপিরা টেবিল চাপড়ে তাকে অভিনন্দন জানান।
Short Biography of Bangabandu Sheikh Mujibur Rahman Some of the biographers of the Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman have said that he was the most astonishing and much talked about leader in South East Asia. In an age of military coup d'etat he attained power through elections and mass upsurge; in an age of decline of democracy he firmly established democracy in one of the countries of Asia and in an age of "Strong Men" he spurned the opportunity of becoming a dictator and instead chose to become the elected Prime Minister. The way he turned a nonviolent non-cooperation movement of unarmed masses into an armed struggle that successfully brought into reality the liberation of a new nation and the creation of a new state in barely ten months will remain a wonder of history.
March 7, 1971 was a day of supreme test in his life. The leaders of the military junta of Pakistan were on that day eagerly waiting to trap him. A contingent of heavily armed Pakistani troops was poised near the Suhrawardy Uddyan to wait for an order to start massacre the people on the plea of suppressing a revolt that Bangabandhu was about to declare against Pakistan at the meeting he was going to address there.
In fact, the entire Bangladesh was then in a state of revolt. The sudden postponement of the scheduled session of the newly elected National Assembly and the reluctance of the military leaders to transfer power to the elected representatives of the people had driven the people to desperation and they were seeking the opportunity to break away from the Pakistani colonial rule. Nearly two million freedom-loving people who assembled at the Suhrawardy Uddyan that day had but one wish, only one demand : "Bangabandhu, declare independence; give us the command for the battle for national liberation."
The Father of the Nation spoke in a calm and restrained language. It was more like a sacred hymn than a speech spellbinding two million people. His historic declaration in the meeting on that day was : "Our struggle this time is for freedom. Our struggle this time is for independence". This was the declaration of independence for Bangladeshis, for their liberation struggle. But he did not give the Pakistani military rulers the opportunity to use their arms. He foiled their carefully laid scheme. In the same speech he took care to put forward four proposals for the solution of the problem in a constitutional way and kept the door open for negotiations.
০৬ জুলাই ২০১২
মোবাইল টেলিফোন বেজে উঠল। প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা ফোন ধরলেন। ওই প্রান্ত থেকে কেউ একজন জানতে চাইলেন-
প্রধানমন্ত্রীই কথা বলছেন কিনা? শেখ হাসিনা জবাব দিলেন- 'হ্যাঁ আমিই বলছি।'
সঙ্গে সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিল অপরপ্রান্ত। শেখ হাসিনা ওই নম্বরে
ফিরতি ফোন করে জানতে চাইলেন কে কথা বলছেন। তখন অপর প্রান্ত থেকে উত্তর এলো-
তিনি বিশ্বাসই করতে পারেননি যে, বাংলাদেশের সরকার প্রধান বলছেন। তাই
নার্ভাস হয়ে নিজেই লাইন কেটে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার পর শেখ
হাসিনা প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ফেরার পর এ
দৃশ্যের অবতারণা হয়। বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটার পর থেকে প্রায় রাত ১১টা
পর্যন্ত এবং শুক্রবার জুমার নামাজের পর অনেকের সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী তার
মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন তার
বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিল। প্রধানমন্ত্রী বুধবার সংসদে
নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তার দুটি মোবাইল
ফোনের নম্বর এবং ই-মেইল ঠিকানা নাগরিকদের জন্য প্রকাশ করে বলেন, তার
পরিবারের সদস্যদের নাম ভাঙিয়ে কেউ কমিশন চাইলে বা অবৈধ সুযোগ নেওয়ার
চেষ্টা করলে তাকে জানাতে। সেল নম্বর হল, +৮৮ ০১৭১১৫২০০০০ এবং +৮৮
০১৮১৯২৬০৩৭১। ই-মেইল:
sheikhhasina@hotmail.com.
শেখ হাসিনা সংসদে বলেন, "আমি, আমার
ছোট বোন এবং আমাদের পাঁচ ছেলে-মেয়ে ছাড়া আমার আর কোনো পরিবার নেই। এর
বাইরে আমার কেউ নেই।" মাহবুবুল হক শাকিল জানান, অধিকাংশ ফোনই এসেছে পদ্মা
সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের জন্য তাকে অভিনন্দন জানিয়ে। অনেকে
আবার শবে বরাতের রাতে ফোন করে প্রধানমন্ত্রীর দোয়া চান। শাকিল বলেন,
"একজন ফোন করে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, 'আমার বিশ্বাসই হয়নি-আপনি ফোন
ধরবেন'। "একজন আবার ফোন করে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, 'আপনি কী সত্যিই শেখ
হাসিনা বলছেন'?'" এছাড়াও অনেক ই-মেইলও পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে
আছেন জাতীয় পার্টির নেতা কাজী ফিরোজ রশীদ। পদ্মা সেতু থেকে বিশ্ব
ব্যাংকের অর্থ প্রত্যাহারের ঘোষণা এবং এনিয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান
নিয়েও অনেকে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে নিজেদের কথা বলেছেন। শাকিল বলেন,
"একজন ফোন করে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী আপনি মাথা নিচু করেন
নাই- এটাই আমাদের গর্ব। দরকার হলে আমরা নিজেরা টাকা তুলে এই সেতু করব'।
"দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ফোন করে এক ব্যক্তি বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
পদ্মা সেতু হবেই। যত ষড়যন্ত্র হোক না কেনো- আপনিই পদ্মা সেতুর কাজ শুরু
করবেন, আপনিই শেষ করবেন'।"
কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে একজন ফোন করে
প্রধানমন্ত্রীকে পদ্মা সেতুর বিষয়ে তার নীতিতে অটল থাকার অনুরোধ করেন।
দুর্নীতির তথ্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী তার মোবাইল ফোন নম্বর দু'টি প্রকাশ
করলেও অনেকেই ফোন করেন ব্যক্তিগত এবং নিজ এলাকার সমস্যা নিয়ে। সুনামগঞ্জ
থেকে একজন ফোন করেন তার গ্রামের সমস্যা প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে। মহিলা
বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক নারী কর্মচারী তার চাকরী রাজস্ব খাতে নেওয়ার
অনুরোধ করেন। বানারী পাড়া থেকে এক ব্যক্তি ফোন করে চারদলীয় জোট সরকারের
সময়ে তাদের ওপর নির্যাতনের কথা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন এবং এর সঙ্গে
জড়িতদের বিচার চান।
সূত্র
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
|
|